Sunday, September 9, 2018

ফ্যাকাল্টি জব

জাপানে ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক আগে থেকেই রিসার্চ শুরু করতে পারে। স্বাভাবিক নিয়মে তৃতীয় বর্ষের মাঝামাঝি থেকে সব ছাত্র-ছাত্রীরা ল্যাবে জয়েন করে। আর আন্ডারগ্রেড শেষ করতে তারা প্রায় দেড় বছর কাজ করে। অনেক আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রী দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই পার্ট টাইম জব হিসেবে ল্যাবে জয়েন করে। সেই ক্ষেত্রে তারা আন্ডারগ্রেড লাইফে আড়াই বছর রিসার্চের সাথে থাকে। তারপর মাস্টার্সের সময় পাক্কা দুই বছর। আর এরা মাস্টার্সে যেই সকল কোর্স নেয়, তাতে পরীক্ষার তেমন বালাই নাই। আর কোর্স নির্বাচনের ক্ষেত্রে তারা নিজের রিসার্চ ফিল্ড বিষয়ক কোর্স নেয়। যারা ক্লাস নেয় তারা মূলত টেক্সট বইয়ের চেয়ে নিজদের রিসার্চের ডাটা নিয়েই বেশির ভাগ ক্লাস নেন। তারপর আসা যাক পিএইচডি তে। পিএইচডি কমপক্ষে তিন বছর। অনেক ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি সময়। আর সাধারনত ছাত্র-ছাত্রীরা খুব কম ক্ষেত্রেই ল্যাব/ইউনিভার্সিটি পরিবর্তন করে। পরিবর্তন করলেও একই ফিল্ডে থাকার চেষ্টা করে। কারণ, তারা সবাই কোন একটা বিষয়ে মাস্টার হতে চায়। এখন যোগ করি। ২.৫ বছর (আন্ডারগ্রেড) + ২ বছর (মাস্টার্স) + ৩ বছর (পিএইচডি) = ৭.৫ বছর! আর কেউ যদি একটু সিরিয়াস হয়, তাহলে কিছু ভালো পেপার করে নিতে পারে এই সময়ে। তারপর যারা পরবর্তীতে ফ্যাকাল্টি হতে চায়, তারা পোস্টডকে জাপানের বাইরে যায় বেশি। জাপানের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা তার ফিল্ডের টপ কোন ল্যাবে যায়। সেখানে পাঁচ থেকে সাত বছর থেকে আর ও কিছু সেই লেভেলের পেপার করে। এখন তো সবাই নেচার, সেল, সায়েন্স না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাকাল্টি জবের জন্য আবেদন করে না। তারপর জব নিয়ে তারা জাপানেই ফিরতে চায়। এখন যেই লোক এতো দিন ধরে একটা লেভেলে পাবলিশ করে অভ্যাস, সে চায় নিজের ল্যাব থেকে সেই সুনাম ধরে রাখতে। তাই দেখা যায় যে, অনেক প্রফেসর এবং সাথে সাথে ছাত্র-ছাত্রীরাও পাগলের মত দিন রাত কাজ করে যায়। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রে দেখবেন যে এদের ওয়েব পেজে কিছুই তেমন লেখা নাই। অনেকে গত পাঁচ/সাত বছরে কিছু পাবলিশ করে নাই। অবাক লাগবে। কারণ, ঐ প্রফেসর সকাল সাত টায় আসে আর যায় গভীর রাতে। অনেকের কাছেই মনে হবে মানসিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু, খোজ নিলে দেখা যাবে, তার লাস্ট পেপার "সেল" এ পাবলিশ করছে। চলমান কাজ ঐ লেভেলে না যাওয়া পর্যন্ত, কোন সাবমিশন হবে না। এদের সাথে কাজ করা এবং টিকে থাকা মানে সব সময় মানসিক চাপের মাঝে থাকা। কিন্তু, কেউ টিকে গেলে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকানো লাগে না।

No comments:

Post a Comment